পেকুয়া প্রতিনিধি:
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দুর্যোগকালে খাদ্য মজুত ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সরকারি খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় একটি নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শুক্রবার (২৫ জুলাই) প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেছেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এম.এইচ. হুমায়ুন কবির।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে, সাবেক গুলদী ব্রিজ সংলগ্ন একটি খালি জমি পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস. এম. কায়ছার আলী, কক্সবাজার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুর রহমান খান, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী, পেকুয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সফওয়ানুল করিমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
পেকুয়ায় এখনও কোনো সরকারি খাদ্য গুদাম না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্যশস্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। বিশেষ করে ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি কিংবা দুর্যোগকালীন খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমে পাশের উপজেলা বা জেলা শহরের গুদামের ওপর নির্ভর করতে হতো।
এ প্রসঙ্গে মহাপরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, “পেকুয়ার জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্য বিবেচনায় এখানে একটি আধুনিক খাদ্য গুদাম অত্যন্ত জরুরি। উপযুক্ত সড়ক যোগাযোগ সুবিধাসম্পন্ন জায়গা বেছে নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই জমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ কাজ শুরু হবে।”
খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, প্রস্তাবিত গুদামটির ধারণক্ষমতা হবে প্রায় ১,৫০০ থেকে ২,০০০ মেট্রিক টন। এটি হবে একটি আধুনিক মানসম্পন্ন ভবন, যেখানে থাকবে ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধী কাঠামো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “এই গুদাম নির্মাণের ফলে সরকারি খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমে গতি আসবে এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় পেকুয়ার সক্ষমতা বাড়বে। একই সঙ্গে স্থানীয় কৃষকরাও উপকৃত হবেন, কারণ তাঁরা সরকারি রেটে ধান-চাল বিক্রির সুযোগ পাবেন।”
পেকুয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সফওয়ানুল করিম বলেন, “এটি পেকুয়াবাসীর বহুদিনের দাবি ছিল। অবশেষে তা বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে দেখে আমরা আশাবাদী।”
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিদর্শনের পর দ্রুততম সময়ে জমি অধিগ্রহণ, প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন এবং দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, পেকুয়ায় সরকারি খাদ্য গুদাম নির্মাণ শুধু খাদ্য মজুত নয়, বরং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার একটি কৌশলগত অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
